করোনা ভাইরাসঃ কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার! 0 6628

Last updated on May 22nd, 2023 at 11:51 am

বর্তমান বিশ্বের এক ভয়াবহ আতঙ্কের নাম এখন করোনা ভাইরাস। চীন থেকে উৎপত্তি লাভ করা এই প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এই ভাইরাসটির নামকরণ করেছে ২০১৯ নোভেল করোনাভাইরাস (২০১৯-এনসিওভি) নামে। মারাত্মক এই ভাইরাসটি বাতাসের মাধ্যমেই মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। আর এটির ভয়াবহতার মাত্রা এতই বেশি যে ইতিমধ্যে এই রোগে আক্রান্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণ

চীনে আবিষ্কৃত এই ভাইরাসের উৎস হিসেবে এক বিশেষ প্রজাতির প্রাণী দেহকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই প্রাণী দেহ থেকে আবার মানুষের দেহে সংক্রমণের সময়ে ভাইরাসটির জিনগত পরিবর্তনে ব্যপকতা লক্ষ করা গেছে। বিজ্ঞানীদের মতে ভাইরাসটি মানুষের দেহ কোষের মধ্যেই মিউটেট করে গঠন পরিবর্তন ও সে অনুসারে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে বাদুড় থেকেই এই বিপজ্জনক ভাইরাসের উৎপত্তি, যেটি হাঁচি-কাশি এমনকি নিঃশ্বাসের মাধ্যমেও একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগা থেকে নিউমোনিয়া, এমনকি ফুসফুস ও কিডনি সহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলার মত যথেষ্ট শক্তিশালী এই করোনাভাইরাস।

be aware of coronavirus - daraz.com.bd

[ছবিতে করোনাভাইরাস]

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ

করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ভয়ের দিক হল এটায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ সময়মত ধরতে না পারা। মূলত ভাইরাসটি ক্ষণে ক্ষণে তার স্বাভাবিক রূপ পরিবর্তন করায় পরিচিত লক্ষণগুলোও পরিবর্তন সাপেক্ষ। তবে অতি সাধারণ কিছু লক্ষণ আছে, যেগুলো সনাক্ত করা খুব বেশি কঠিন অবশ্য নয়।

  • ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম দিকে নাকে সারাক্ষণ সর্দি লেগে থাকা সহ সাইনাস, ঘন ঘন হাঁচি ও কফ সহ শুকনো কাশির প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যেতে পারে,
  • ক্ষেত্র বিশেষে কোন কোন সংক্রমিত রোগির দেহে জ্বর থাকতে পারে,
  • ঠোঁটের উপরিভাগ সহ বিভিন্ন অংশে ঘা হওয়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ,
  • গলায় ইনফেকশন দেখা যেতে পারে,
  • শ্বাসতন্ত্রে ইনফেকশন হওয়ার ফলে শ্বাসকষ্ট হওয়া,
  • একটানা ঠান্ডা লেগে থাকার ফলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা থাকে,
  • আক্রান্ত ব্যাক্তির হার্টে সমস্যা দেখা দিলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না,
  • ফুসফুস ও কিডনি সহ দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফেইলিওর হয়ে রোগিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া।

বি.দ্রঃ করোনাভাইরাস মানব দেহে সংক্রমিত হতে কমপক্ষে ৫ দিন সময় নেয়, সেক্ষেত্রে উপরোক্ত লক্ষণ সমূহ দেখা দেওয়ার ৭ দিনের মধ্যে রোগীকে হাঁসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসার আওতায় আনতে পারলে বড় ধরণের বিপদ অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রতিকার

be aware of corona virus

এ মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি সহ সকলের জন্যই চিকিৎসকের পরামর্শ একমাত্র কাম্য, যেহেতু প্রতিষেধক এখনো পুরোপুরি পর্যাপ্ত নয়। এমতাবস্থায় ব্যক্তিগত সতর্কতা ও বিশেষ কিছু প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিকার আপনার জন্য বর্তমানে একান্তই করণীয়।

⇒ করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়ঃ

  • ঘরের বাইরে ফেস মাস্ক ব্যবহার করা,
  • সর্বদা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা,
  • হাত ও আঙুলের সংস্পর্শ থেকে চোখ, নাক ও মুখ দূরে রেখে ফেসিয়াল টিস্যু ও হ্যান্ড টাওয়েল ব্যবহার করা,
  • ইনফেকটেড মানুষ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা,
  • জীবাণু বহন করে এমন জিনিসপত্র যেমন ডোরনব, গাড়ির হ্যান্ডেল সহ যাবতীয় বস্তু স্পর্শের পরে হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত ভালভাবে ধুয়ে ফেলা।

⇒ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে করণীয়ঃ

  • যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়া,
  • জ্বর এবং ঠোঁটে ও গলার ঘা সারানোর জন্য মেডিসিন ব্যবহার প্রযোজ্য,
  • সর্বোপরি ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করা।

করোনা ভাইরাস যতই ভয়াবহ হোক না কেন, সেটায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা অনেকাংশেই সম্ভব। এজন্য দরকার অহেতুক আতঙ্ক পরিহার করা, চিকিৎসকের পরামর্শ ঠিকঠাক মেনে চলা, করোনা সম্পর্কে নিজে সচেতন হওয়া এবং অন্যকে সতর্ক করা।

Ready to download the Daraz App?

Found this insightful? Choose your network to share:

Previous ArticleNext Article
Avatar for Shuvo Roy
Shuvo Roy, an enthusiastic Content Writer & Researcher, has expertise in several industries, especially in IT, Software & E-commerce. He loves to explore modern technology and write different technical and creative content for business solutions. Traveling is the next passion to him after writing.

Leave a Reply